,

মহাসড়কে অবৈধ স্থাপনার তালিকা হচ্ছে

বিডিনিউজ ১০ ডেস্ক: সারাদেশে মহাসড়কের দুই পাশে অবৈধ দখলদারদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। গত শনিবার (১২ জানুয়ারি) থেকে পুলিশ এ তালিকা তৈরি করছে। তালিকায় ১ হাজারের বেশি দখলদারের নাম আসতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তালিকা তৈরির কাজ শেষ হলে দখলদারদের প্রথমিকভাবে নোটিশ দেয়া হবে। এরপর তারা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেন না করলে ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেত করা হবে। হাইওয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সব তথ্য জানিয়েছেন।

মহাসড়কে বিশৃঙ্খা ও যানজট নিয়ন্ত্রণের জন্য নতুন বছরের শুরুতে সরকার পদক্ষেপ নিয়েছে। এরই অংশ হিসেবে সম্প্রতি সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়েদুল কাদের মহাসড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে দুই পাশে থাকা সব অবৈধ স্থাপনা ও দখলদারদের উচ্ছেদের নির্দেশ দেন। মন্ত্রীর নির্দেশের পরপর শনিবার থেকে হাইওয়ে পুলিশের বিশেষ টিম ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কসহ দেশের সব মহাসড়কের দুই পাশে অবৈধভাবে যারা দখল করে বিভিন্ন স্থাপনা তৈরি করছে। ওই সব স্থাপনার জন্য মহাসড়কে গেল বছর জুড়ে নানা সমস্যা ও যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এর প্রভাব পড়ছে অন্যান্য সড়কে। এ নিয়ে নানা আলোচনার পর বছরের শুরুতে মহাসড়ক দখলদারমুক্ত করার কাজ শুরু করা হয়েছে। সারাদেশের ২১ হাজার কিলোমিটার মহাসড়ক রয়েছে।

হাইওয়ে পুলিশের একজন কর্মকর্তা বলেন, শনিবার থেকে দখলদারদের তালিকা তৈরির কাজ চলছে। তালিকা তৈরির কাজ শেষ হলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে। তালিকা অনুযায়ী উচ্ছেদ করতে জেলা প্রশাসকের কাছে ম্যাজিস্ট্রেট চাওয়া হবে। এর আগে অবশ্য তাদের নিয়ম অনুযায়ী অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের জন্য নিদিষ্ট সময় দেয়া হবে।

সূত্র জানায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ছাড়াও ঢাকা-আরিচা, ঢাকা-টাঙ্গাইল, ঢাকা-মাওয়া, ঢাকা-সিলেটসহ ২২টি সড়কের দুই পাশে দীর্ঘদিন ধরে প্রভাবশালীরা অবৈধভাবে রাস্তা দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করেছে। তাদের দাপটে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বাধা দিতে সাহস পায়নি। এখন নতুন সরকার দায়িত্ব নেয়ার পরই মহাসড়কের যানজটমুক্ত করার উপর গুরুত্ব দেয়। এরপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টনক নড়ে।

এ দিকে হাইওয়ে পুলিশের অপর এক সূত্র জানায়, মহাসড়কে দিন দিন যানবহনের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি অনেক সড়কে ধীরগতির নসিমন, করিমন ও অটোরিকশা (সিএনজি)সহ ধীরগতির যে সব যানবাহন অবৈধভাবে চলাচল করে সেগুলোর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে। এর ফলে মহাসড়কের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে পারে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গেল বছর প্রায় সময় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে নানা কারণে প্রচ- যানজটের সৃষ্টি হয়। ভোর ৬টার দিকে ঢাকা থেকে নোয়াখালীর উদ্দেশে রওনা হওয়ার পর প্রচ- যানজটের কারণে সারাদিন রাস্তায় থাকতে হয়েছে। আগে যে পথে ৪ থেকে ৫ ঘণ্টায় যাতায়াত করা যেত। ১২ ঘণ্টায় যাওয়া কষ্টকর হয়ে পড়েছে। রাস্তার চরম ভোগান্তির কারণে এখন মানুষ বিকল্প পথে লঞ্চ বা ট্রেনে যাচ্ছে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মতে, প্রতিদিন মহাসড়কে যানবহনের সংখ্যা বাড়ছে। সরকারি ছুটির দিন এ সংখ্যা আরও বেড়ে যায়। তখন মহাসড়কে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে।

সূত্র জানায়, মহাসড়কে দুই পাশে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ছাড়াও যানজট নিয়ন্ত্রণে চালকদের অব্যবস্থাপনা এবং চাঁদাবাজি হচ্ছে কিনা তা জানার জন্য ক্লোজ সার্কিট ক্যামরা স্থাপন ও ওয়ার্চ টাওয়ার বসিয়ে তা মনিটর করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক সিসি ক্যামরার আওতায় আনা হবে। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য সড়ক এ আওতায় আসবে। আর মহাসড়কে দুর্ঘটনা কবলিত যানবাহন শনাক্ত করার জন্য ব্যবস্থা থাকবে। কোন ড্রাইভার নেশা করে যানবাহন চালাচ্ছে কিনা তাও শনাক্ত করার ব্যবস্থা থাকবে। ঢাকা ও কুমিল্লা, ফেনী, চট্টগ্রামসহ মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে সিসি ক্যামরা মনিটর থাকবে।

এই বিভাগের আরও খবর